আমাদের দুর্বলতা ফুটে উঠেছে। নিজেদের কিছু ভুলত্রুটি আছে। সেগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা দলকে ঐক্যবদ্ধ করব
আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, আওয়ামী লীগ
বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দাপটের সঙ্গে টানা তিন মেয়াদ রাষ্ট্র পরিচালনা করছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। তবে এ দল চার মেয়াদে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসলেও প্রায় আট মাসের মাথায় আওয়ামী লীগ আকস্মিকভাবে এক প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। এবারের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বেশ বেকায়দায় পড়েছে সরকারি দলটি। বিশেষ করে চলমান আন্দোলনকে ঘিরে সংঘাতের সময় দলের পক্ষ থেকে নির্দেশনা থাকার পরও মাঠে ছিলেন না মূল দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এতে দলের ভেতরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে খোদ দলীয়প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ক্ষুব্ধ। এতে দলের ভেতরে-বাইরে সব পর্যায়ে সাংগঠনিক দুর্বলতা ফুটে উঠেছে। তবে দলের বিপদে দেশ ছেড়ে যাওয়া কিংবা দলের নির্দেশনা না মানা নেতাদের তালিকা তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে দলটি। শুধু তাই নয়, গত চার মেয়াদে চাওয়া-পাওয়া এবং তৃণমূল পর্যায়ের থানা-ওয়ার্ড ও জেলা পর্যায়ে সম্মেলনের পরও কোনো কমিটি গঠন করতে পারেনি দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। আর যেগুলো আংশিক কিংবা পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে, তাতে অনুপ্রবেশকারী ও হাইব্রিড নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে স্থান দেয়ায় দলের প্রকৃত ও ত্যাগী নেতাকর্মীরা ক্ষোভ-অভিমানে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। এজন্যই দলের কোনো নির্দেশনা কাজে আসছে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দলের দায়িত্বশীল সূত্রমতে, চার মেয়াদে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকার বিপুল উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। সরকারি কেনাকাটায় কমিশন আদায় এবং হাট-ঘাট, পরিবহনখাতেও বিপুল চাঁদাবাজি করে অর্থ বানানোয় অনেকে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে যেকোনো মূল্যে আধিপত্য ধরে রাখতে মরিয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এজন্যই সংঘাত ও প্রাণহানি এবং সরকার বিরোধীদের নানামুখী ষড়যন্ত্র ঠেকানো যাচ্ছে না। জানা গেছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় আসার প্রায় সাড়ে সাত মাসের মাথায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দেয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কিন্তু সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করে অনেক মন্ত্রী-এমপি এবং দলের নেতারা দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমান। এতে দলের বর্তমান সাংগঠনিক দুর্বলতা ফুটে উঠেছে। তবে যেসকল নেতাকর্মী কিংবা মন্ত্রী-এমপি শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে নৈরাজ্য-সহিংসতা প্রতিরোধে মাঠে ছিলেন এবং জীবন বাজি রেখে সাহসিকতার সঙ্গে জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় কাজ করেছেন, সামনের দিনগুলোতে তাদের মূল্যায়ন করবে আওয়ামী লীগ। একইসঙ্গে দলের বিপদে দেশ ছেড়ে যাওয়া নেতাদের তালিকা তৈরি করার নির্দেশনা দিয়েছে দলের হাইকমান্ড। এসব বিষয়গুলো নিয়ে নানামুখী আলোচনা শুরু হয়েছে। সর্বশেষ গত বুধবার ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। এতে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ওপর ক্ষুব্ধ হয় নেতাকর্মীরা। তরুণ ও সাবেক নেতারা বৈঠকে ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে, যা পরিস্থিতিকে জটিল করেছে। তরুণ নেতারা মনে করছেন, দল ও সরকারের সঙ্কটে সাধারণ সম্পাদকের দায় বেশি। প্রধানমন্ত্রী দলের সভাপতি। তিনিই শেষ অবলম্বন। কিন্তু সব বিষয়ে তাকে নজর দিতে হলে সাধারণ সম্পাদকের কাজটা কী? এছাড়া তার অতিকথন পরিস্থিতিকে জটিল করেছে বলে অভিযোগ তাদের। মাঠের এমন পরিস্থিতি হাইকমান্ডকে চিন্তায় ফেললেও কেউ যেন দায় নিতে রাজি নন। শুধু আওয়ামী লীগেই নয়, সহযোগী সংগঠনগুলোতেও দলের বিপদে পাশে থাকা না থাকা নিয়ে চলছে নানান আলোচনা। এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের সব সংগঠনের সমন্বয়হীনতা দূর করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে সুবিধাবাদী-ফাঁকিবাজ ও দলের বিপদে দেশ ছেড়ে যাওয়া নেতাদের তালিকা তৈরি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গুঞ্জন আছে, গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে নেতৃত্বের পরিবর্তনও হতে পারে। ব্যর্থতার দায়ে এরইমধ্যে ঢাকা উত্তরের ২৭ ইউনিটের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। যদিও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, দীর্ঘদিন কমিটি না হওয়া, যোগ্যদের মূল্যায়ন না করে টাকার বিনিময়ে পদ-পদবি দেয়ায় দলের বিপদে কাউকে পাশে পাওয়া যাচ্ছে না। মূল্যায়ন না পাওয়া নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ ঝাড়ছেন অনেকে। এরই ধারাবাহিকতায় সাবেক ছাত্র নেতাদের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে খোদ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে। শুধু তাই নয়, দীর্ঘদিনের জোটসঙ্গী ১৪ দলের নেতারাও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের কড়া সমালোচনা করছেন। বৈরী পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে তাদের সক্ষমতা নিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রীর সামনে তারা প্রশ্ন তুলেছেন। মধ্য জুলাইয়ে পুরোদমে শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শুরুর দিকে পরিস্থিতি বেশ অনুকূলেই ছিল সরকারের। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চললেও হঠাৎ করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে জড়ানোর মধ্য দিয়ে পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করে। বিশেষ করে ছাত্রদের আন্দোলন ঘিরে ১৮ ও ১৯ জুলাই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। ১৮ জুলাই ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়েও হামলার চেষ্টা হয়। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে কারফিউ দেয়া হয়। এ পরিস্থিতির দায় কার?
‘আওয়ামী লীগের ভেতরে-বাইরে আলোচনা চলছে’ এমন পরিস্থিতি তৈরির আগেই দলের পক্ষ থেকে ভেবে-চিন্তে সিদ্ধান্ত আসলে তা হয়তো এড়ানো যেত। এজন্য অনেকেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলছেন। গত ২৯ জুলাই রাতে গণভবনে অনুষ্ঠিত ১৪ দলের বৈঠকে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, দলের (আওয়ামী লীগ) ব্যর্থতা, প্রশাসনিক ভুলত্রুটির কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। এগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করতে হবে। ওবায়দুল কাদেরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সাবেক এই তথ্যমন্ত্রী বলেন, তার বক্তব্য-বিবৃতি পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করে তোলে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কোটা আন্দোলন ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হওয়ার পর গত ২৩ জুলাই বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগরী আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের শীর্ষ নেতা, ঢাকার দলীয় এমপিদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন ওবায়দুল কাদের। যেখানে নেতাকর্মীদের মাঠে না থাকার বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ক্ষুব্ধ মনোভাবের কথা জানানো হয়। পাশাপাশি ভেদাভেদ ভুলে নিজেদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা কাটানোর নির্দেশনা দেয়া হয়। একইসঙ্গে গা-ঢাকা দেয়া নেতাদের তালিকা তৈরি করতে দলীয় প্রধানের নির্দেশনার কথাও জানিয়ে দেন ওবায়দুল কাদের। ওই বৈঠকে কোটা আন্দোলনের সময় সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি হওয়া এলাকার কাউন্সিলরদের ব্যর্থতার বিষয়ও তুলে ধরা হয় বলে জানা গেছে।
প্রকাশ্যে আসছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল: গত ২৬ জুলাই দল গোছাতে সমন্বয় সভা ডাকা হলে সেখানেও মাঠে থাকা না থাকার ইস্যু নিয়ে শীর্ষ নেতাদের সামনে ঢাকার নেতারা বাদানুবাদে জড়ান। একজন মাঠে ছিলেন দাবি করে বক্তব্য দিলে অন্যজন তা খণ্ডন করে প্রতিবাদ জানান। এক পর্যায়ে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা-১৪ আসনের সংসদ সদস্য মাইনুল হোসেন খান নিখিল মাঠে কোনো নেতাকে পাশে পাননি বলে জানালে বিষয়টির প্রতিবাদ জানান ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মান্নান কচি। এরপর বাদানুবাদে জড়ান এই দুই নেতা। পরে পরিস্থিতি কেন্দ্রীয় নেতারা সামাল দেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগের সাবেক নারী নেত্রীদের ৩০ জুলাই রাতের এক বৈঠকে কারা মাঠে ছিলেন আর কারা ছিলেন না তা নিয়ে নিজেরাই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। যেখানে একজন যুব মহিলা লীগ মাঠে ছিল না এমন বক্তব্য দিলে অন্যরা প্রতিবাদ করেন। সবশেষ ৩১ জুলাই দলের অভ্যন্তরের সমস্যা সামনে আসে। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা ডেকেছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। কিন্তু মতবিনিময় সভা ডেকে কাউকে কথা বলার সুযোগ না দেয়ায় চটে যান সাবেক নেতারা। এমন আচরণকে ‘স্বেচ্ছাচারিতা’ বলেছেন তারা। আমন্ত্রণ পেয়ে আসা ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ডেকে এনে আপনি একাই কথা বলা শুরু করলেন, আমাদেরও তো বহু কথা আছে। তখন অনেকে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে অনুষ্ঠান শেষ না করেই সভাস্থল ত্যাগ করেন ওবায়দুল কাদের।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা ওভাবে নেই। এবার কিছুটা সমন্বয়হীনতা ছিল। বিশেষ করে যাত্রাবাড়ী-রামপুড়া, উত্তরায় বেশি সমস্যা হয়েছে। পরিস্থিতি এমন হবে এটা ভাবনাতেও ছিল না অনেকের। তিনি বলেন, যেহেতু ছাত্রদের আন্দোলন, তাই ফ্রন্ট লাইনে থেকে ছাত্রলীগ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারবে এমনটাই আশা করা হয়েছিল। কিন্তু ঢাবি থেকে ওরা যখন বের হয়ে গেল তখন অন্যদের মাঝেও এর প্রভাব পড়েছে। এরা ক্যাম্পাসে থাকতে পারলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতো। এরসঙ্গে বিএনপি-জামায়াত তো সুযোগ নিয়েছে। সামনের পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের শোকের মাসে প্রচুর অনুষ্ঠান থাকবে। ফলে নেতাকর্মীদের সক্রিয়তা থাকবে। আশা করি এই সময়ের মধ্যে সমন্বয়হীনতা কেটে যাবে। নিজেদের কষ্টের কথা তুলে ধরে সাবেক ছাত্রনেতাদের মতবিনিময়ে অংশ নেয়া ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আমাদের ডাকা হয়েছিল কথা বলতে। আমাদেরও তো কিছু কথা আছে। কিন্তু সেসব না শুনে সাধারণ সম্পাদক নিজে বক্তব্য রেখে চলে গেছেন। ছাত্রলীগ নেতাদেরকে সব সময় মাঠে খাটানো হয়, সব ধরনের রিস্ক নেয় ছাত্রনেতারা, কিন্তু নেতাদের কাছে কথা বলা যায় না।
ঘুরে দাঁড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ: কোটাবিরোধী আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি হওয়া সহিংস পরিস্থিতিতে রাজধানী ঢাকায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দুর্বলতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। দলের কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায় মনে করছে, টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার সময়ে ঢাকার রাজপথে দলের নেতাকর্মীরা কখনো এমন ব্যর্থ হননি। এটিকে বিপর্যয় হিসেবে দেখে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর ছক আঁকছে আওয়ামী লীগ। দলের কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতা এমনটি জানিয়েছেন। সর্বশেষ ৩০ জুলাই বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ দলীয় কার্যালয়ে এক বৈঠকে নিজেদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে দলের বিভেদ ভুলে সবাইকে এক হতে আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ওই বৈঠকে প্রতিটি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জমায়েতের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়। কারফিউ প্রত্যাহার করা হলে যেকোনো প্রয়োজনে রাজপথে নামার দরকার হলে যেন নেতাকর্মীরা সঙ্গে সঙ্গে নামতে পারেন সেভাবে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আসলে আমাদের নেতাকর্মীরা তো শান্তিপ্রিয়। আমরা আইন মেনে চলি। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত তো ছক এঁকে অস্ত্র নিয়ে হামলা করেছে। তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদেরও হত্যা করেছে। তিনি বলেন, আমাদের দুর্বলতা ফুটে উঠেছে। নিজেদের কিছু ভুলত্রুটি আছে। সেগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা দলকে ঐক্যবদ্ধ করব। তবে ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, আমরা ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের ডেকেছিলাম। কারফিউ উঠে যাওয়ার পর যেন নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে পারেন সে বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একটা খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ থেকে আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

* ক্ষুব্ধ আ’লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী * কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাংগঠনিক দুর্বলতা ফুটে উঠেছে * হাইকমান্ডের নির্দেশনার পরও মাঠে ছিলেন না নেতাকর্মীরা * দলের বিপদে দেশ ছেড়ে যাওয়া নেতাদের তালিকা তৈরি করার নির্দেশ * ঘুরে দাঁড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ
প্রকাশ্যে কোন্দল আওয়ামী লীগে
- আপলোড সময় : ০৩-০৮-২০২৪ ০১:১৩:০১ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৩-০৮-২০২৪ ০১:১৩:০১ পূর্বাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ